মিডিয়া এনালাইসিস:
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে জনপ্রিয় ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ের খবর। এই ইউটিউবারের বিয়ের খবর দিতে গিয়ে তার স্ত্রীর নাম ভুল করেছে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশকারী মূলধারার সবকটি সংবাদমাধ্যম। স্ত্রীর নাম রামিসা রিসা হলেও সংবাদমাধ্যমগুলো আফ্রিদির স্ত্রীর জমজ বোন রাইসার নাম তার স্ত্রীর নাম হিসেবে উল্লেখ করেছিলো।
তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ে নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো গত ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪টায় “তৌহিদ আফ্রিদি কি সত্যি বিয়ে করেছেন” শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। সেখানে আফ্রিদির স্ত্রীর নাম রাইসা উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে ১৪ নভেম্বর বিকেল ৪টায় “তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ের আসল খবর জানা গেল” শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এখানেও আফ্রিদির স্ত্রীর নাম রাইসা উল্লেখ করা হয়।
এবার ১৫ নভেম্বর বিকলে ৪ টা ৩৩ মিনিটে পত্রিকাটি তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ে নিয়ে “রাইসা না রিসা? তৌহিদ আফ্রিদির বউ বিভ্রাট!” শিরোনামে আরও একটি খবর প্রকাশ করে যেখানে তৌহিদ আফ্রিদির স্ত্রীর নাম রিসা বলা হয়।
এ প্রতিবেদনের ইন্ট্রোতে বলা হয়- “দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ের সাজের একাধিক স্থিরচিত্র দেখা যায়। জানা যায়, রাইসা নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেছেন তিনি। তবে আজ শুক্রবার তৌহিদ আফ্রিদির বউ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, তাঁর বউ রাইসা নন, রিসাকে বিয়ে করেছেন—সম্পর্কে রাইসা আর রিসা যমজ বোন।”
“আসল খবর জানা গেল” শিরোনাম দিয়ে ফলোআপ খবরেও প্রথম আলো ভুল তথ্য প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ নিশ্চিত তথ্য বলে জোর দিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে ভুল তথ্য। এটি পাঠককে কয়েকগুণ বিভ্রান্ত করবে।
প্রথম আলো তাদের খবরে শিরোনামে তৌহিদ আফ্রিদির স্ত্রীর ভুল নাম ছড়ানোকে “বউ বিভ্রাট” বললেও এটি ছিলো আসলে সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য বিভ্রাট। কারণ নিশ্চিত না হয়ে ভুল তথ্যটি প্রচার করেছে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলিই। আর এতে প্রথম আলোও অংশ নিয়েছে। তৌহিদ আফ্রিদি নিজে তার স্ত্রীর নাম ভুল প্রচার করেননি।
“আসল খবর জানা গেল” শিরোনাম দিয়ে ফলোআপ খবরেও প্রথম আলো ভুল তথ্য প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ নিশ্চিত তথ্য বলে জোর দিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে ভুল তথ্য। এটি পাঠককে কয়েকগুণ বিভ্রান্ত করবে। ফলে পত্রিকাটি আফ্রিদির বিয়ে নিয়ে প্রতিবেদনে যে শিরোনাম দিয়েছে সেটি আপত্তিকর এবং শিরোনাম বিভ্রাটের শামিল।
সাংবাদিকতার নৈতিকা অনুসারে প্রথম আলোর উচিত ছিলো তাদের ভুল তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনগুলো প্রত্যাহার করা, কিংবা ভুল তথ্য সংশোধন করে সঠিক তথ্যের নোট দেয়া ও পাঠকের কাছে দু:খ প্রকাশ করা। একইসাথে ফলোআপ সংবাদে পূর্ববর্তী ভুলের কথা উল্লেখ করা।
এই বিশ্লেষণটি লেখা পর্যন্ত পত্রিকাটি এমন কোন পদক্ষেপই নেয়নি। বরং পূর্ববর্তী দু’টি ভুল তথ্যের খবর অবিকল রেখেছে। একই সাথে ভুল তথ্য ছড়ানোর দায় সামাজিক যোগাযোগম মাধ্যমের উপর দিয়ে এমন চটকদার শিরোনাম দিয়েছে যাতে মনে হতে পারে তথ্য বিভ্রাটটি আফ্রিদি নিজেই ঘটিয়েছেন।