বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৪০ কোটি ছাড়ানো নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক খবর

 

বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৪০ কোটি ছাড়িয়েছে বলে ’বিশ্ব জরিপ সংস্থা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র সাইয়্যিদ মুহম্মদ আকতার ই-কামালের বরাতে খবর প্রকাশ করেছে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখুন  এখানে, এখানেএখানে

ফ্যাক্ট অর ফলস্ এই খবরটিকে একটি বিভ্রান্তিমূলক খবর হিসেবে শনাক্ত করেছে। কার্যত ’বিশ্ব জরিপ সংস্থা’ নামে কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের শিরোনামে ’বিশ্ব জরিপ সংস্থা’ বলা হলেও প্রতিষ্ঠানের যে লোগো ব্যবাহার করা হয়েছে তাতে বাংলায় ’বিশ্ব জরিপ ফাউন্ডেশন’ ও ’ইংরেজিতে ওয়ার্ল্ড সার্ভে ফাউন্ডেশন’ লেখা রয়েছে। এ নামের প্রতিষ্ঠানের কোন ওয়েবসাইটের অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি।

শিরোনামে বিশ্ব জরিপ ফাউন্ডেশনের বদলে শিরোনামে বিশ্ব জরিপ সংস্থা লেখায় পাঠকের মনে হতে পারে এটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠান। কার্যত আন্তর্জাতিক এমন কোন সংস্থার অস্তিত্বই নেই।

দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত খবরে প্রতিষ্ঠানটির বরাতে বলা হয়, ”১৯৯৭ এরপর প্রত্যেক সরকার ও এনজিওরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রকৃত সংখ্যা লুকিয়ে রাখতে চেয়েছে। জনসংখ্যা বেশি দেখালে বিদেশী তহবিল আসা বন্ধ হয়ে যাবে-এমন আশঙ্কা থেকেই জনসংখ্যার প্রকৃত সংখ্যা লুকানো হয়েছে।”

প্রতিবেদনে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি তুলনামূলক হিসাব তুলে ধরে বলা হয়, ”১৯৯৬ তে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বললেন, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি’। সেই ১৭ কোটি থেকে দেশের জনসংখ্যা কি আর বাড়েনি? প্রশ্ন রাখেন বিশ্ব জরিপ সংস্থা। আমরা যদি ১৯৬৯ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ২৭ বছরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দেখি, তাহলে সেটা দেখতে পাই সোয়া তিন গুণেরও (৩.২৬ গুণ) বেশি। তাহলে ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সালের এই ২৮ বছরেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩/৪ গুণ বাড়ার কথা। কারণ পূর্বের চেয়ে গড় আয়ু বেড়েছে। বর্তমানে ৪০ কোটি জনসংখ্যা ধরলে সেটা আড়াই গুণেরও কম (২.৩৫ গুণ) ধরা হয়। কাজেই বাস্তবতা হচ্ছে- বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৪০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আর সোয়া তিন গুণ হিসাব করলে জনসংখ্যা হয় প্রায় ৫৫ কোটি।”

উপরের বর্ণনায় বোঝা যাচ্ছে এটি পাল্টা কোন জরিপের ফলাফল নয়। বরং একটি অনুমান ভিত্তিক দাবি। জরিপ ছাড়া এ ধরণের দাবি সুনির্দিষ্টভাবে কোন কিছু প্রমাণ করেনা।