রূপপুর নিয়ে হাসিনা-টিউলিপের ব্যাপারে কোন রায় দেয়নি ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ফ্যাক্ট অর ফলস টিম

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি দাবি প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তার মেয়ে পুতুল ও ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) বাতিল করেছে। যাচাইয়ে দেখা গেছে, এটি একটি ভিত্তিহীন দাবি যার কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই।

ফেসবুকে বেশ কিছু পোস্টে (, , ) টিউলিপ ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ছবি দিয়ে এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। পোস্টগুলোতে আরও দাবি করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের দায়ের করা পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দিয়েছেন শেখ হাসিনা সহ তিনজনকে। রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একই রায় দিয়েছে এবং ভারত সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

যাচাইয়ে দেখা যায়, এই দাবির পক্ষে কোনো শক্ত প্রমাণ নেই। সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চালাচ্ছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২৪ সালের শেষের দিকে দুদক শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও অন্যান্য ব্যক্তিদের নামে আনুষ্ঠানিক মামলা করেছে। তবে এই মামলা বা তদন্তের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই এবং ইইউ কখনোই এ ধরনের কোনো অভিযোগ তোলে নি বা প্রত্যাহার করে নি।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স এবং দ্য গার্ডিয়ান এর প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ একটি তদন্ত প্রক্রিয়া। প্রতিবেদনগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো অংশগ্রহনের কথা উল্লেখ করেনি। 

অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে, বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে “গোয়েন্দা সংস্থা” বা সেই সংস্থার কোনো “প্রেসিডেন্ট”—বিশেষ করে “Dirfscek Kerty” নামে কাউকে শীর্ষস্থানীয় কোনো পদে থাকার প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ইউ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ইউ এর সর্বোচ্চ সরকারি পদগুলির নাম রয়েছে: ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা বা তার প্রেসিডেন্টের কোনো উল্লেখ নেই।

এদিকে, রাশিয়া আদালত থেকে উক্ত বিষয়ে কোনো রায় ঘোষণার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার আদালত শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা রায় সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করেনি। এই মামলার সাথে সম্পর্কিত কোনো রায় রাশিয়া আদালত থেকে আসেনি। 

এসব তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা রাশিয়া কোনো রায় দেয়নি এবং উক্ত  মামলায় তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। রূপপুর প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত চালাচ্ছে, তবে এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা রাশিয়ার কোনো ভূমিকা নেই। 

Facebook
LinkedIn
Twitter
Pinterest

সম্পর্কিত পোস্ট