ভিন্ন মনজুর কাদেরকে এনসিপির প্রার্থী দাবি করে অপতথ্য ছড়ালেন পিনাকী

ফ্যাক্ট অর ফলস টিম

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করেছে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। 

বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনজুর কাদের।

সম্প্রতি Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য তার প্রোফাইলে এক পোস্টে দাবি করছে, এনিসিপির সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মেজর মনজুর কাদের হলো খুনি হাসিনার সহযোগী যিনি মিরপুর রোডের ওপর অবস্থিত ধানমন্ডি ৭ ও ৮ নম্বর সড়কের মধ্যকার বিশাল মাঠ জুড়ে থাকা ধানমন্ডি ক্লাব দখল করে এর নাম বদলে ‘শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব’ বানিয়েছিল পতিত ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনামলে।

তবে ফ্যাক্ট অর ফলস এর যাচাইয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, এনসিপির প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনজুর কাদের এবং শেখ জামাল ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের একই ব্যক্তি নন।

এনসিপির প্রার্থী মেজর মনজুর কাদের ৮ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। মনজুর কাদের ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিডিনিউজ২৪ এর গত ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ এর “এনসিপির প্রার্থী হলেন বিএনপির সাবেক এমপি মনজুর কাদের” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “মনজুর কাদের ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ থেকে ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন মনজুর কাদের। এরপর ১৯৯৬ সালে পাবনা-১ আসন এবং ২০০১ সালে সিরাজগঞ্জ-৬ (চৌহালী ও শাহজাদপুর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান মনজুর কাদের। এবারও তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দল থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির (রাজশাহী বিভাগীয়) সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় এনসিপিতে যোগদান করে এই আসনটির মনোনয়ন পেয়েছেন মনজুর কাদের।”

পিনাকী ভট্টাচার্যের দাবিকৃত তথ্য অনুযায়ী কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাগো নিউজের ০৭ মার্চ ২০১৭ এর “শেখ জামালের সভাপতির পদ ছাড়ছেন মনজুর কাদের” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মনজুর কাদেরের ছবির সাথে এনসিপির প্রার্থী মনজুর কাদেরের ছবির মিল নেই; অর্থাৎ তারা দুইজন আলাদা ব্যক্তি।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকা মনজুর কাদের সরে দাঁড়াচ্ছেন। ক্লাবটির নতুন সভাপতি হচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাফওয়ান সোবহান। সভাপতির পদ ছাড়লেও ক্লাবটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন মনজুর কাদের এবং গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হচ্ছেন।”

পিনাকী ভট্টাচার্য তার পোস্টে যে তথ্যগুলো দিয়েছেন সেটি জাগো নিউজের প্রতিবেদনের তথ্যের সাথে মিল রয়েছে। 

পিনাকী ভট্টাচার্য এনসিপির প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনজুর কাদের সম্পর্কে যে দাবি করেছেন যে তিনি শেখ জামাল ফুটবল ক্লাবের সভাপতি ছিলেন এবং পতিত সরকারের সহযোগী ছিলেন সেটি সঠিক নয়। অর্থাৎ এক মনজুর কাদেরের তথ্য অন্য মনজুর কাদেরের নামে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন পিনাকী ভট্টাচার্য।  

Facebook
LinkedIn
Twitter
Pinterest

সম্পর্কিত পোস্ট