রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপদ্বীপে ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে শক্তিশালী ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পের পর সামাজিক মাধ্যমে একটি সিসিটিভি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা রাশিয়ার ওই ভূমিকম্পের লাইভ দৃশ্য বলে দাবি করা হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়—একটি ইলেকট্রনিক ও মোবাইল এক্সেসরিজের দোকানে এক নারী বসে আছেন, হঠাৎ প্রবল কম্পনে তাক ও র্যাকগুলো ভেঙে পড়ছে এবং দোকানের সব মালপত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ভিডিওটি রাশিয়ার ভূমিকম্পের লাইভ দৃশ্য বলে দাবি করে বাংলাদেশের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও কিছু অনলাইন সংবাদমাধ্যম শেয়ার করে। এমন দাবিতে কিছু পোস্ট দেখুন এখানে এখানে এখানে।
কিন্তু যাচাইয়ে দেখা গেছে—এই ভিডিও রাশিয়ার নয়। এটি মিয়ানমারের একটি পুরোনো ভূমিকম্পের ফুটেজ।
ভিডিওর ফ্রেমে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার তারিখ–সময় স্ট্যাম্পেই মূল সূত্র পাওয়া যায়। ফুটেজের কোণায় স্পষ্টভাবে “2025-03-28” লেখা দেখা যায়। অর্থাৎ এটি ধারণ করা হয়েছিল ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ, যা রাশিয়ার ভূমিকম্পের চার মাস আগের ঘটনা।
প্রকৃতপক্ষে ওই দিন মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানায়, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয়ের কাছে সাগাইং অঞ্চলে। এর প্রভাবে থাইল্যান্ড, চীনসহ পার্শ্ববর্তী দেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চে দেখা যায়, ভাইরাল হওয়া ফুটেজটি ভূমিকম্পের সময়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। যেমন: ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল ৩১ মার্চ ২০২৫ তারিখে এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছিল—“মিয়ানমারে ভূমিকম্পে দোকানের তাক ভেঙে পড়লো।” ইউরোপীয় সংবাদ প্ল্যাটফর্ম নেক্সটা ৩০ মার্চ ভিডিওটি প্রকাশ করে জানায়—“এই মেয়েটি তার কর্মস্থলে ভূমিকম্প থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে।”
সুতরাং, এসব নির্ভরযোগ্য সূত্র স্পষ্ট করে যে ভিডিওটি মিয়ানমারের ভূমিকম্পের সময় ধারণকৃত, রাশিয়ার নয়।
